মনোযোগের সাথে কাজ করার গুরুত্ব আমরা সবাই জানি। মনোযোগ ধরে রাখতে পারলে একদিকে যেমন ভুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়, অন্যদিকে কর্মক্ষেত্রে সফল হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
সমস্যাটা হচ্ছে অফিসে বস ও কলিগদের মাঝে বসে কাজ করার সময় মনোযোগ ধরে রাখাটা বেশ কঠিন। আবার অনেকের স্বভাবগতভাবেই মনোযোগ ধরে রাখতে অসুবিধা হয়।
এসব অসুবিধার কারণেই খুঁজে বের করা হয়েছে বেশ কিছু পদ্ধতি ও কৌশল যা মনোযোগ ধরে রাখায় সহায়ক হিসেবে কাজ করে। এরকমই ১৫টি পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব এই আর্টিকেলে।
১। গুছিয়ে কাজ করুন
আপনার কাজ আর আশেপাশের পরিবেশ যতো অগোছালো থাকবে, খুঁটিনাটি বিষয়গুলো থেকে মনোযোগ সরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে ততো বেশি। তাই মনোযোগ বাড়ানোর অন্যতম একটা উপায় হচ্ছে সবকিছু যতোটা সম্ভব গুছিয়ে রাখা।
গুছিয়ে কাজ করার মানে এটা না যে আপনার ডেস্ক সবসময় সুন্দরভাবে সাজানো থাকতে হবে বা কোনো অপ্রয়োজনীয় জিনিস থাকা যাবে না। এর মানে হচ্ছে আপনার কখন কী করতে হবে তার পরিকল্পনা গোছানো।
ক্যালেন্ডার ব্যবহার করে সব অ্যাপয়েন্টমেন্ট ও মিটিং শিডিউল করুন যাতে কোনোটার কথা সহজে ভুলে না যান এবং প্রতিটি মিটিং-এর জন্য তথ্য ও আইডিয়া নোট করে রাখুন। এরপর ডেডলাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তারিখের ওপর ভিত্তি করে প্রতিদিন কী কী করতে চান তার পরিকল্পনা করুন।
রাইডার ক্যারলের বুলেট জার্নাল ও ডেভিড অ্যালেনের Getting Things Done (GTD)-এর মতো পদ্ধতিগুলো মনোযোগ ধরে রাখা ও কাজের পরিকল্পনা করার ক্ষেত্রে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আপনিও এ ধরনের কোনো পদ্ধতি ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
২। তালিকা তৈরি করুন
অনেকের মধ্যেই একটা ধারণা দেখা যায় যে লিস্ট তৈরি করা এবং পরিকল্পিতভাবে কাজ করা সৃজনশীলতা নষ্ট করে দেয়। এটা খুবই ভুল একটা ধারণা। কাজের তালিকা বানানো বরং সৃজনশীলতাকে বিকশিত করে। কারণ এতে করে প্রতিটি কাজকে প্রয়োজনীয় সময় দেওয়া যায়, যাতে করে কাজ থেকে তৈরি হওয়া মানসিক চাপ অনেকটা কমে আসে। এবং বর্তমানে যে কাজটা করছেন তার দিকে সম্পূর্ণ মনোযোগ দেওয়া সম্ভব হয়।
কাজের তালিকা বানানো আর পরিকল্পনা করা বেশ মজার একটা কাজ। তবে পরিকল্পনার দিকে অনেক বেশি মনোযোগ দেওয়া আবার সময় অপচয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। লিস্ট তৈরির জন্য আপনি কাগজ কলম নিঃসন্দেহে ব্যবহার করতে পারেন। তবে এই ডিজিটাল যুগে ব্যবহার্য অনেক অ্যাপ আছে যা আপনার পরিকল্পনা করার পদ্ধতিকে সহজ করে তুলবে এবং সময়মতো কাজের কথা মনেও করিয়ে দেবে।
কাজের লিস্ট ও তার সাথে সম্পর্কিত নোট রাখার জন্য আমার ব্যক্তিগত পছন্দের অ্যাপ হচ্ছে Google Task এবং Google Keep. দুটো অ্যাপেই অভ্যস্ত হওয়া যেমন সহজ, ব্যবহারের দিক দিয়ে তেমন কার্যকরী। এছাড়াও চাইলে আপনি Todoist বা Any.do এর মতো অন্য কোনো অ্যাপও ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
৩। ডিস্ট্র্যাকশন থেকে দূরে থাকুন
মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে পাশের ডেস্কে বসা কলিগ পর্যন্ত কাজের সময় আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করার জিনিসের অভাব হয় না। প্রশ্ন হচ্ছে, এইসব ডিস্ট্র্যাকশন থেকে নিজেকে দূরে রাখবেন কীভাবে?
আমরা অনেকেই অফিসে খোলামেলা পরিবেশে অনেক মানুষের মধ্যে বসে কাজ করি। ফলে দেখা যায় সবসময়ই কেউ না কেউ কথা বলছে অথবা হাঁটাচলা করছে। আপনার নিজেকে এই সব কিছু থেকে মানসিকভাবে আলাদা করতে শিখতে হবে, যাতে আপনি কাজের দিকে সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে পারেন।
এর জন্য অনেকেই নয়েজ ক্যান্সেলেশন হেডফোন ব্যবহার করেন। রিসার্চে পাওয়া গেছে, যারা কাজ করার সময় ক্লাসিক্যাল মিউজিক শোনেন তাঁদের কাজের প্রতি মনোযোগ বেশি হয়। ইউটিউবে অনেক ধরনে ‘ফোকাস মিউজিক’-এর প্লে লিস্ট পাওয়া যায়, যা থেকে আপনি পছন্দ মতো একটি প্লে লিস্ট খুঁজে নিতে পারেন। তবে মনোযোগে সাহায্য করার জন্য কোনো লিরিক্স যুক্ত মিউজিক না শোনাই আমার মতে ভালো, কারণ তাতে বরং ডিস্ট্র্যাকশনের পরিমাণ আরও বাড়ে।
এছাড়াও মোবাইলের নোটিফিকেশন বন্ধ রাখা অথবা মোবাইল দূরে রেখে কাজ করতে বসা, ডেস্কটপে ইমেইল ও মেসেজ নোটিফিকেশন বন্ধ করে রাখা – এইসবও কাজ থেকে হঠাৎ মনোযোগ সরে যাওয়ার সম্ভাবনা কমাবে।
৪। নিয়মিত বিরতি নিন
যতক্ষণ আমরা কাজ করি, আমাদের মস্তিষ্কের পেশীগুলোও ততক্ষণ বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ পায় না। ফলস্বরূপ এই পেশীগুলো ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং যে কোনো কাজে সম্পূর্ণ মনোযোগ দেওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। প্রতিদিন টানা আট ঘণ্টা করে কাজ করা কারও জন্যই বাস্তবসম্মত নয়, এতে বরং বার্ন আউট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে অনেক বেশি। তাই মনোযোগ ধরে রাখার ক্ষমতা বাড়াতে প্রয়োজন পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং নিয়মিত বিরতি নেওয়া।
মাঝে মাঝে চেয়ার থেকে উঠে অফিসের ভেতর হাঁটাহাঁটি করা অথবা মানসিক বিরতি নিতে কাজের সাথে সম্পর্কিত নয় এমন একটি ব্লগ পোস্ট পড়া পরবর্তীতে কাজের প্রতি আপনাকে আরও মনোযোগী করে তুলতে পারে।
৫। ভিডিও গেইম খেলুন
আমাদের পেশীগুলোর ভালো পারফর্ম করতে যেমন বিশ্রাম দরকার, তেমনি প্র্যাকটিসও দরকার। মস্তিষ্কের পেশীর ক্ষেত্রেও এটা সত্য। একজন ক্রীড়াবিদের যেমন প্রতিদিন শারীরিক ব্যায়াম করতে হয়, চাকরিজীবীদেরও তেমনি প্রতিদিন মানসিক ব্যায়াম করা দরকার।
আর তা করার সবচেয়ে সহজ ও মজার পদ্ধতি হচ্ছে ভিডিও গেইম খেলা। এমন অনেক গেইম রয়েছে যা মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। বিভিন্ন স্ট্র্যাটেজি বা ‘স্পট দ্যা ডিফরেন্স’ গেইম এক্ষেত্রে সাধারণত বেশি কার্যকর হয়। এছাড়া Peak অথবা Elevate এর মতো অ্যাপগুলোও অনেক সময় মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।
৬। কাজকে উপভোগ করতে শিখুন
অনেক সময় মনোযোগ দিতে না পারার একটা বড় কারণ হচ্ছে কাজ করে আনন্দ না পাওয়া। এবং অনেক সময় সেটা যৌক্তিকও। চাকরি বা ব্যক্তি জীবনে অনেককেই প্রচণ্ড মানসিক চাপের মধ্য দিয়ে যেতে হয়, যা পছন্দের কাজটাকেও একটা নিরস বিষয়ে পরিণত করে। কিন্তু ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করার ফলাফল সাধারণত হয় নিম্ন মানের কাজ, যা আপনার ক্যারিয়ারের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।
আপনার দৈনন্দিন কাজের প্রক্রিয়াকে কীভাবে আরও উপভোগ্য করতে পারেন তা নিয়ে ভাবুন। ডেটা এন্ট্রি করতে ভালো লাগে না? পছন্দের মিউজিক শোনা বা প্রিয় চা-কফি পান করার মাধ্যমে এই কাজকে একটা ভালো অভিজ্ঞতায় পরিণত করুন। কাজের চাপ এতো বেশি যে কোনো কিছুই সময় নিয়ে করতে পারেন না? বসের সাথে কথা বলে কাজের চাপ কমিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন।
৭। রুটিন অনুসরণ করুন
অতিমাত্রায় রুটিন মতো চলা যেমন জীবনের আনন্দকে নষ্ট করে দিতে পারে, একেবারে কোনো রুটিন না থাকাও কারণ হতে পারে বিশৃঙ্খলার। ভাবছেন, রুটিন আপনাকে মনোযোগী হতে কীভাবে সাহায্য করবে? রুটিন মেনে চলার অর্থ হচ্ছে প্রতিদিন একই সময়ে একই ধরনের কাজ করা। এতে অভ্যস্ত হয়ে গেলে খাওয়া, ঘুম এবং অন্যান্য দৈনন্দিন কাজ নিয়ে চিন্তা করার প্রয়োজন কমে যাবে। ফলাফল, কাজের প্রতি আরও বেশি মনোযোগ।
নিজের জন্য রুটিন তৈরি করুন এবং তা যতোটা সম্ভব অনুসরণ করতে চেষ্টা করুন। ভালো ও স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়তে দরকার হয় অনেক সময় ও ধৈর্য। তাই নিজেকে বেশি চাপ না দিয়ে ছোট ছোট অভ্যাস তৈরির মাধ্যমে শুরু করাটাই সবচেয়ে ভালো।
৮। পরিমাণের চেয়ে গুণগত মানকে বেশি গুরুত্ব দিন
অনেকেই দ্রুততার সাথে কাজ সম্পন্ন করাকে কাজের মান নিশ্চিত করার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। কিন্তু দ্রুত কাজ করা মানে হচ্ছে খুঁটিনাটী বিষয়ে নজর দেওয়ার জন্য সময় না নেওয়া, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে আপনার ক্যারিয়ার এবং মর্যাদার ওপর।
অতিরিক্ত ডেডলাইনের চাপ না নিয়ে বরং কাজের গুণগত মান নিশ্চিত করাতে বেশি গুরুত্ব দিন। কারণ নির্ভুলভাবে সম্পন্ন হওয়া কাজ অনেক দীর্ঘ মেয়াদী ফলাফল এনে দিতে পারে।
৯। নিজেকে পুরস্কৃত করুন
মনোযোগ ধরে রেখে লম্বা সময় কাজ করা কোনো সহজ ব্যাপার নয়। প্রায় সবাই এই জিনিসটা নিয়ে সমস্যায় ভোগে। এবং আপনি যদি সফলভাবে মনোযোগ ধরে রেখে কাজ করতে পারেন, আপনার অবশ্যই পুরস্কৃত হওয়া উচিত। তাহলে সেই পুরস্কারের জন্য অন্য কারো অপেক্ষা করছেন কেনো? নিজেই নিজেকে পুরস্কৃত করার ব্যবস্থা করে ফেলুন!
এর একটা উপায় হতে পারে বিরতি নেওয়ার মাধ্যমে নিজেকে পুরস্কৃত করা। ধরুন, আপনি গত ৩০ মিনিট সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে কাজ করেছেন, এবার আপনার মস্তিষ্ককে বিশ্রাম দেওয়ার জন্য একটু বিরতি নিন। নিজেকে অনুপ্রাণিত রাখতে কোন ব্যবস্থাটা ভালো কাজ করে তা খুঁজে বের করতে পারলে পুরস্কৃত করার এই পদ্ধতি অনেক কার্যকরী রূপ ধারণ করতে পারে।
১০। মিটিংগুলোতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিন
কাজে মনোযোগ না থাকার অন্যতম একটা কারণ হচ্ছে কাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলা। আপনি যদি নিজের চাকরি বা প্রজেক্টের ব্যাপারে আগ্রহ বোধ না করেন, তা অনেকখানি পরিবর্তন হতে পারে মিটিং-এ অংশগ্রহণের মাধ্যমে। সব কোম্পানি ও প্রজেক্টেই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয় এর মিটিং-এর মাধ্যমে। এসব মিটিং-এ নিজের মতামত সক্রিয়ভাবে প্রকাশ করে আপনিও সেই সিদ্ধান্তের অংশ হতে পারেন, যা কাজের প্রতি আপনাকে আরও আগ্রহী করে তুলবে।
১১। এক সময়ে শুধু একটা কাজ করুন
অনেকেই মনে করেন যে একসাথে একাধিক কাজ করলে বেশি কাজ করা সম্ভব। কিন্তু এই ধারণা ভুল হওয়ার প্রমাণ বিভিন্ন রিসার্চে অনেকবার পাওয়া গেছে। এমনকি কোনো কোনো স্টাডি এটাও প্রমাণ করেছে যে একসাথে একাধিক কাজ করা প্রোডাক্টিভিটিকে ৪০% কমিয়ে দেয়।
এর অন্যতম কারণ হলো বার বার এক কাজ থেকে মনোযোগ সরিয়ে আরেক কাজে মনোযোগ দেওয়া। এতে করে সময় যেমন নষ্ট হয়, কাজের মানও তেমন কমে যায়। তাই মনোযোগের সাথে কাজ করতে চাইলে এক সময়ে একটা কাজ করাই সবচেয়ে ভালো।
১২। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির কথা আগে ভাবুন
এই কৌশলটির সাথে হয়তো অনেকেই দ্বিমত পোষণ করবেন। কিন্তু সবচেয়ে খারাপ ফলাফলের কথা চিন্তা করা আপনাকে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হতে সাহায্য করবে।
আপনার গাফিলতি বা অমনোযোগ আপনার ক্যারিয়ার ও কোম্পানির ব্যবসায়িক অবস্থাকে কতোটা প্রভাবিত করতে পারে তা সম্পর্কে ধারণা থাকলে সহজাতভাবেই আপনি মনোযোগের সাথে কাজ করার অনুপ্রেরণা পাবেন। হয়তো আপনি যে পরিস্থিতিটা চিন্তা করছেন তা কখনোই ঘটবে না। কিন্তু ঝুঁকি না নিয়ে বরং প্রস্তুত থাকাই ভালো।
১৩। বই পড়ুন
যতো দিন যাচ্ছে, আমরা ততো বই থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। আর তার কারণও আছে। জ্ঞান অর্জন হোক বা শুধু বিনোদন, বই পড়ার চেয়ে অনেক সহজ ও আনন্দদায়ক মাধ্যম এখন আমাদের কাছে সহজলভ্য। কিন্তু বই পড়া যেভাবে আপনার মনোযোগ বাড়াবে, অন্য কোনো মাধ্যম তা পারবে না।
হোম গ্রাউন্ডস-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং CEO, অ্যালেক্স মাস্টিনের মতে বই পড়া মানুষের মনোযোগকে গভীরতর করে এবং লম্বা সময় মনোযোগ ধরে রাখার প্রশিক্ষণ দেয়। তিনি বলেন, “ব্যক্তিগতভাবে আমি বই পড়তে পছন্দ করি কারণ ঠিক কতো পৃষ্ঠা পড়ার পর আমি বিরক্ত হয়ে যাই বা মনোযোগ হারিয়ে ফেলি তা গোণা খুব সহজ। দিনে মাত্র ১০ মিনিট করে বই পড়ার মাধ্যমে সহজেই মনোযোগ বাড়ানোর অভ্যাস শুরু করা যায়।”
১৪। কোন কাজটা কীভাবে করবেন তার ম্যাপ তৈরি করুন
অনুপ্রেরণা হারিয়ে ফেলার অন্যতম কারণ হচ্ছে একটা কাজ কীভাবে করতে হবে তা সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা না থাকা। এতে করে এরপর কী করবেন বা আপনি সঠিক দিকে এগুচ্ছেন কিনা তা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে। যার ফলস্বরূপ কাজে মনোযোগ দিতে কষ্ট হয়।
যে কোনো অ্যাসাইনমেন্ট বা টাস্কের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কী কী ধাপ অনুসরণ করবেন তার একটি তালিকা অথবা ম্যাপ তৈরি করুন। যাতে সেই পরিকল্পনা অনুসরণ করে সহজেই এক ধাপ থেকে অন্য ধাপে এগিয়ে যেতে পারেন।
Crediful-এর CMO লুকাস রবিনসন বলেছেন, “আপনি কোত্থেকে শুরু করছেন এবং কোথায় যেতে চান তা না জানলে যাত্রা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।”
১৫। তিন ধরনের গভীর মনোযোগ সম্পর্কে ভাবুন
গ্রন্থকার এবং AttentionToDetail.com এর প্রতিষ্ঠাতা ক্রিস ডেনির মতে মনোযোগ তিন ধরনের – বিপরীত, বিশ্লেষণাত্মক ও সংযোজক। এই তিন ধরনের মনোযোগের মাঝে পার্থক্য বুঝতে না পারা মনোযোগের সমস্যা সংক্রান্ত হতাশার মূল কারণ।
তিনি আরও বলেছেন যে পাঁচটি মৌলিক বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখার মাধ্যমে এই প্রতিটি ধরনের মনোযোগ বাড়ানো যায়, আর তা হলো লক্ষ্য, আগ্রহ, জ্ঞান, পদ্ধতি এবং শুদ্ধ-অশুদ্ধের ধারণা।
ডেনি বলেন, “প্রায় সবাই এই পাঁচটির কোনো না কোনো ক্ষেত্রে শক্তিশালী। কেউ যদি এই পাঁচটি মৌলিক বিষয়ের দিকে খেয়াল রেখে প্রত্যেকটিতে উন্নতি লাভের চেষ্টা করে, তার মনোযোগ ধরে রাখার ক্ষমতা অবশ্যই বাড়বে।”
যে কোনো চাকরিজীবীর জন্যই মনোযোগ ধরে রাখার দক্ষতা বাড়ানো শিক্ষণীয় একটি স্কিল। তবে বিশেষ করে যারা মাত্র ক্যারিয়ার শুরু করেছেন, তাঁদের জন্য এটা খুবই জরুরি। তাই মনোযোগ বাড়ানোর নানা রকম কৌশল ও পদ্ধতি খুঁজে বের করা ক্যারিয়ারে এগিয়ে যাওয়ার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।