‘প্রথম চাকরি’ – কীভাবে পাবেন?

October 26, 2021 |
Views: 446

পড়াশোনা শেষ? চাকরির সন্ধানে নামতে প্রস্তুত? কিন্তু কীভাবে শুরু করবেন বুঝতে পারছেন না? নানারকম প্রশ্ন নিশ্চয়ই আপনার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে! সামনে কী কী অপশন আছে, কোত্থেকে শুরু করবেন চাকরির খোঁজ – এমন অনেক কিছুই এই সময় নতুন করে জানার প্রয়োজন হয়।

তবে চিন্তার কিছু নেই। এই সব প্রশ্নের উত্তরসহ চাকরি সন্ধানের ব্যাপারে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস পেয়ে যাবেন এই আর্টিকেলে!

আমার প্রথম চাকরিটা কি পড়াশোনার বিষয়ের সাথে সম্পর্কিতই হতে হবে?

এই প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত উত্তর হচ্ছে – না, আপনার চাকরি পড়াশোনার বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত হওয়া বাধ্যতামূলক নয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেক চাকরির জন্য ব্যাচেলর ডিগ্রির প্রয়োজন হলেও, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডিগ্রির বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ না।

চাকরিদাতারা এখন সিভিতে কাজের সাথে সম্পর্কিত ট্রান্সফারেবল স্কিল দেখতে অনেক বেশি আগ্রহী এবং এই স্কিলগুলো ইন্টার্নশিপ, পার্ট টাইম চাকরি, ছাত্রদের নানা সংগঠন, ক্লাসের প্রজেক্ট এবং স্বেচ্ছাসেবী কাজসহ বিভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা থেকে পাওয়া যায়। আপনার যদি বিশেষ কোনো স্কিল বা সার্টিফিকেট থাকে, অবশ্যই তা সিভিতে উল্লেখ করুন।

কিছু কিছু চাকরিতে অবশ্য সম্পর্কিত বিষয়ে পড়াশোনা করা বাধ্যতামূলক থাকে। যেমন, মেডিকেল থেকে পড়াশোনা না করে চিকিৎসক হিসেবে অথবা আইন নিয়ে পড়াশোনা না করি আইনজীবী হিসেবে চাকরি পাওয়া সম্ভব নয়। তবে এই ধরনের চাকরির প্রতিবেদনে সবসময়ই শিক্ষাগত যোগ্যতা অংশে প্রয়োজনীয় ডিগ্রির তথ্য লেখা থাকে। তাই আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন কোন চাকরিতে আবেদন করা উচিত, আর কোনটাতে না।

এন্ট্রি-লেভেল চাকরিতে কতোদিন থাকবো?

গ্র্যাজুয়েশন শেষে এন্ট্রি লেভেল পজিশনে কাজ করা গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহারিক দক্ষতা অর্জনের খুব ভালো সুযোগ। এন্ট্রি লেভেলে যারা কাজ করেন তাঁদের প্রশিক্ষণ সাধারণত দীর্ঘ সময় ধরে হয়। তাই এই পজিশনে দুই বছরের মতো কাজ করা আপনার জন্য লাভজনক হবে। তবে অন্তত এক বছরের আগে চাকরি পরিবর্তন না করাই ভালো।

যদিও চাকরি পরিবর্তন করার মাঝে দোষের কিছু নেই, কিন্তু খুব ঘন ঘন চাকরি পরিবর্তন করাকে অনেক চাকরিদাতাই নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখেন। যে কোনো পজিশনে নতুন কাউকে নিয়োগ দিলে তার প্রশিক্ষণের পেছনে অনেক সময় ব্যয় করা হয়। আপনার এন্ট্রি-লেভেল পজিশনে যেমন করা হবে, পরবর্তী চাকরিতেও করা হবে। চাকরি পরিবর্তনের আগে তাই আপনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করার জন্য কোম্পানি যে সময়টা খরচ করেছে সেই অনুযায়ী আপনি কোম্পানির অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখতে পেরেছেন কিনা সেই বিষয়টা মাথায় রাখা উচিত।

মনে রাখবেন, ব্যবহারিক দক্ষতা অর্জন করাই এন্ট্রি-লেভেল চাকরির একমাত্র উদ্দেশ্য নয়। এর পাশাপাশি আপনার ইন্ডাস্ট্রির অনেক গুরুত্বপূর্ণ মানুষের সাথে পরিচয় হবে এবং প্রফেশনাল নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি পাবে। খুব তাড়াতাড়ি চাকরি পরিবর্তন এই সম্পর্কগুলোর বৃদ্ধিতে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। সহকর্মীদের সাথে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক তৈরি পরবর্তীতে আপনার ক্যারিয়ারে অনেক কাজে আসবে। তাই কাজ শেখার পাশাপাশি সহকর্মীদের সাথে কথা বলুন এবং তাঁদের কাছ থেকে শেখার চেষ্টা করুন। এতে ভবিষ্যতে আপনি লাভবানই হবেন।

আমি তো এর আগে চাকরি করি নি, তাহলে সিভিতে অভিজ্ঞতা দেখাবো কীভাবে?

একজন সদ্য গ্র্যাজুয়েট হিসেবে আপনার চাকরির অভিজ্ঞতা না থাকাটাই স্বাভাবিক। চাকরিদাতারাও এটা জানেন। তবে চাকরি না করেও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় থেকে নানারকম অভিজ্ঞতা অর্জন করা যায়। এবং আপনার সিভির দেখার সময় চাকরিদাতারা এটাই খোঁজেন। কোন অভিজ্ঞতাগুলো আপনার এই চাকরির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ? কী কী দক্ষতা আপনি অর্জন করেছেন সেই অভিজ্ঞতা থেকে?

এই অভিজ্ঞতা হতে পারে অ্যাকাডেমিক। যে চাকরির আবেদন করছেন তার সাথে সম্পর্কিত কোর্স, ক্লাস প্রজেক্ট বা সাংগঠনিক কাজের অভিজ্ঞতা উপস্থাপন করুন। এছাড়া ব্যক্তিগত কোনো প্রজেক্ট, ফ্রিল্যান্সিং বা স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ করেও আপনি প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করতে পারেন।

কোন চাকরিতে আবেদন করা উচিত বুঝবো কীভাবে?

নিজের আগ্রহ ও দক্ষতার সাথে সামঞ্জস্য রেখে উপযুক্ত চাকরি খুঁজে বের করা কোনো সহজ কাজ না। এর জন্য আপনাকে বেশ খানিকটা পরিশ্রম করতে হবে। এর জন্য প্রথম দু’টি ধাপ হচ্ছে নিজের জন্য সঠিক পেশা কোনটা তা জানা এবং সেই পেশার সাথে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো নিয়ে রিসার্চ করা।

সঠিক পেশা বেছে নেওয়ার জন্য প্রথমেই নিজের একটি ‘ইভ্যালুয়েশন’ করা দরকার। অর্থাৎ আপনার কী কী যোগ্যতা আছে, কোন দিকগুলো এখনও একটু দুর্বল, কী ধরনের কাজ করতে আপনার অনেক ভালো লাগে আর কোন কাজগুলো আপনি করতে চান না – এই সবকিছু যাচাই করা। এই বিষয়গুলো সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা হয়ে গেলে তারপর আপনার আগ্রহ ও দক্ষতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ পেশায় চাকরির সন্ধান শুরু করতে পারেন।

কোন চাকরিগুলো আপনার জন্য সঠিক সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরের কাজ হচ্ছে সেই চাকরি কোন কোন কোম্পানিতে করা সম্ভব তা খুঁজে বের করা। এবং সে কোম্পানিগুলোর কাজের ধরণ, লক্ষ্য, অভ্যন্তরীন কালচার, বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিয়ে রিসার্চ করা। এই পর্যায়ে কোম্পানিতে কার্যরত কেউ পরিচিত থাকলে তার সাথে কথা বলে তথ্য সংগ্রহ করা বিশেষ লাভজনক হতে পারে।

আপনার প্রথম চাকরির সন্ধান শুরু করুন এখান থেকেই

পছন্দের পেশা ও কোম্পানি বেছে নেওয়ার পরবর্তী ধাপ হচ্ছে চাকরি খোঁজা। এই পর্যায়ে আপনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন চাকরির পোর্টালের সাহায্য নিতে পারেন। চাকরি অ্যাপে আজই একটি ফ্রি অ্যাকাউন্ট খুলে নিজের সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে প্রোফাইল পূরণ করে ফেলুন। প্রোফাইলের সাথে মিলে যায় এমন চাকরির বিজ্ঞপ্তি আসলে ইমেইলে পাঠানো নোটিফিকেশন থেকে মুহূর্তের মধ্যেই আবেদন করে ফেলতে পারবেন।

আশা করি শীঘ্রই পেয়ে যাবেন আপনার স্বপ্নের চাকরি!